अजमेर : মঙ্গলবার অর্ধনগ্ন অবস্থায় তলোয়ার হাতে এক যুবক আজমির শরিফ দরগায় ঢুকে পড়ে। এর জেরে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয় সেখানে। যদিও সৌভাগ্যক্রমে সেই ব্যক্তি সময়মতো ধরা পড়ে। ধৃতের নাম আলম আলি। সে উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। জানা গিয়েছে, দরগাহ চত্বরে অবস্থিত শাহজাহানি মসজিদে ঢুকে পড়েছিল সেই অভিযুক্ত যুবক। অর্ধনগ্ন হয়ে সে তলোয়ার নাড়তে লাগে সেখানে ঢুকে। এর জেরে দরগা চত্বরে শোরগোল পড়ে যায়। মসজিদে উপস্থিত কয়েকজন সাহস দেখিয়ে তাকে ধরে ফেলে। এ ঘটনায় এক যুবকও আহত হয়েছেন। (আরও পড়ুন: ৯% চড়ল VIX, ১৩৯০ পয়েন্ট পতন সেনসেক্সে, এর মাঝে ১৯.১২% বাড়ল এই শেয়ারের দাম)
আরও পড়ুন: ফের দক্ষিণবঙ্গে নামবে স্বস্তির বৃষ্টি, কোথায় কবে হতে পারে বর্ষণ? গরম কি কমবে?
অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। চিকিৎসাও করা হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, ওই যুবকের মানসিক অবস্থা ভালো নয়। তবে পুলিশ বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত করছে। তিনি কোনও নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য নিয়ে তলোয়ার নিয়ে সেখানে গিয়েছিল কি না, তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। এদিকে এভাবে তলোয়ার হাতে দরগায় একটি যুবক ঢুকে পড়ায় সেখানকার নিরাপত্তা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে। সারা দেশ এবং বিশ্বের হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন আজমির শরিফে প্রার্থনা করতে আসেন। এটি দেশের অন্যতম প্রধান ইসলামিক ধর্মীয় পীঠস্থান। মুসলমানদের পাশাপাশি অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরাও খাজা মইনুদ্দিন চিশতির চাদর দিতে আসেন। (আরও পড়ুন: এপ্রিলের শুরুতেই ১০০০ টাকা দাম বাড়ল ২২ ক্যারেট সোনার, কলকাতায় কত রেট হলুদ ধাতুর)
এদিকে গতকাল ইদের দিন ওয়াকফ সংশোধনীকে সমর্থন জানান আজমির শরিফের অল ইন্ডিয়া সুফি সাজ্জাদানশিন পরিষদের সভাপতি নাসিরুদ্দিন চিশতি। তাঁর দাবি, ওয়াকফ বোর্ডকে ভুল বোঝানো হচ্ছে। ইদের নামাজের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আজমির দরগার আধ্যাত্মিক প্রধানের উত্তরসূরি সৈয়দ নাসিরুদ্দিন চিশতি সরকারের ওয়াকফ সংশোধনী সংক্রান্ত পদক্ষেপের যৌক্তিকতা তুলে ধরে বলেন, 'অনেক চিন্তাভাবনার পর এটা করা হয়েছে। বিরোধিতা, সহমত ও দ্বিমত পোষণ গণতন্ত্রের অংশ। সাংবিধানিক উপায়ে কেউ যদি বিরোধিতা করে, তাতে কোনও সমস্যা নেই। তবে ওয়াকফের ক্ষেত্রে আমি মনে করি ওয়াকফ সংশোধন করা দরকার। এই সংশোধনীর ফলে মসজিদ, কবরস্থান সরানো হবে বলে যে দাবি করা হচ্ছে, সেটা ভুল। সরকার খুব শান্তভাবে বিলটি এনেছিল। তা পাঠানো হয়েছে জেসিপিতে। জেসিপি সবার কথা শুনেছে। তার পরেই এবার বিল পেশ করা হবে।'
তিনি আরও বলেন, 'আমি আন্তরিকভাবে আশা করি সংশোধনীর পর ওয়াকফে স্বচ্ছতা আসবে। ওয়াকফ সম্পত্তি রক্ষা করা হবে। ওয়াকফের যে সম্পত্তি ইতোমধ্যে দখল হয়ে গিয়েছে তাদের সরিয়ে দেওয়া হবে। ভাড়া বাড়বে যা কমিউনিটির কাজে লাগবে। যারা বলছে, এটা শরিয়তের ব্যাপারে হস্তক্ষেপ, তারা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। না, ওয়াকফ ইস্যু আলাদা। ওয়াকফ পরিচালনার জন্য ১৯৫৪ সালে একটি আইন আনা হয়। এর মধ্যে সিস্টেম তৈরি করা হয়েছে। একজন সিইও আছেন, একজন চেয়ারম্যান আছেন, সদস্য আছেন। এর কার্যকারিতা পরিবর্তন কে তা আরও কার্যকর করা হচ্ছে। এটা সৌভাগ্য যে আমরা ভারতের মতো দেশে বাস করছি, এখানে জন্মেছি। আমরা এ দেশের নাগরিক। এখানেই দেখা যাবে, একদিন ইদ হয় তো পরদিন নবরাত্রি উদযাপিত হয়। উৎসবে সারা দেশের মানুষ একে অপরকে অভিনন্দন জানাচ্ছে। এটাই আমাদের দেশের শক্তি।'