বাড়ির সামনে বাঁধানো সিমেন্টের চেয়ারে বসে তিন খুদে। ফেসবুকের পাতায় উঠে আসা এই ছবির ক্যাপশান, ‘আমি দিদি আর ছোড়দা’। ছবিটি পোস্ট করেছেন সাম্প্রতিক সময়ে চর্চিত এক সঙ্গীতশিল্পী। আর তাঁর পোস্ট করা এই ছবিতে নেটপাড়ায় কমেন্টের বন্যা বয়ে গিয়েছে। চিনতে পারছেন এই শিল্পীকে?
তাহলে কিছু ইঙ্গিত দেওয়া যাক, বাঁকুড়ার ভাদুলের মেয়ে তিনি। অতি সম্প্রতি গানের রিয়েলিটি শো সারেগামাপা-২০২৪এর হাত ধরে চর্চায় উঠে আসেন। জনপ্রিয়তাও পান। কে ইনি? এবার কি বুঝতে পারছেন?
আরেকটু খোলসা করা যাক। সারেগামাপা-র মঞ্চে এই শিল্পীর নামের পাশে জুড়েছিল 'কমরেড' তকমা। গণসঙ্গীতের পসরা সাজিয়ে হাজির হয়েছিলেন তিনি। বলেছিলেন, ‘আমি মানুষের গান গাই, আমি পথে ঘাটে, মিটিং-মিছিলে গান গাই…'। লোকসভা ভোটে বামশূন্য, তবুও নতুন ভোরের স্বপ্ন দেখার কথা বলেছিলেন এই ‘কমরেড’। এবার নিশ্চয় চিনে গিয়েছেন।
হ্য়াঁ, আরাত্রিকা সিনহার কথা-ই বলছিলাম। সেই আরাত্রিকাই নিজের ফেসবুকের পাতায় দাদা ও দিদির সঙ্গে নিজের ছোটবেলার ছবি পোস্ট করেছেন। ছবিতে ডানদিকের হলুদ টি-শার্ট পরা ছোট্ট মেয়েটি হল আরাত্রিকা। এবার নিশ্চয় চিনে নিতে অসুবিধা হচ্ছে না।
প্রসঙ্গত, আরাত্রিকা অবশ্য শুরু গণসংঙ্গীতই নয়, সারেগামাপা-তে তিনি আধুনিক বাংলা গান থেকে, বলিউডি গান, রবীন্দ্রসংগীত, লোকগীতি, সব ধরনের গানই শোনা গিয়েছিল তাঁর গলাতে। সারেগামাপা-র মঞ্চে ভালোবেসেই তাঁকে দেওয়া হয় ‘খুদে কমরেড’ খেতাব। তাঁর তাঁর দৃঢ় কণ্ঠে ও গায়কীতে মজে ছিলেন কৌশিকি চক্রবর্তী, জাভেদ আলিরা।
এদিকে আরাত্রিকার বাবার অভিযোগ ছিল, বামযোগের কারণে প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও একাধিক জায়গা থেকে বাদ পড়েছিলেন আরাত্রিকা। এমনকী, বাঁকুড়া বইমেলাতেও নাকি গাইতে দেওয়া হয়নি তাঁর মেয়েকে।
এর আগে হিন্দুস্তান টাইমস বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আরাত্রিকা বলেন এই ‘খুদে কমরেড ট্যাগটা আমার আগে খুব ভালো লাগত। মনে হত, বাহ আমাকে খুদে কমরেড বলছে। তবে এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে ব্যাপারটা একটু নেগেটিভ দিকে যাচ্ছে অবশ্যই। এক কোণে করে দেওয়ার একটা বিশাল বড় প্রবণতা তৈরি হচ্ছে, এই খুদে কমরেড ট্যাগ লাইনটা ব্যবহার করে করে। আমি শিল্পী। এটাই আমার প্রথম ও শেষ পরিচয়। মানুষ কীভাবে আমাকে রিপ্রেজেন্ট করছে, সেটা মানুষের উপরে। আমাকে যতবার এই প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে, আমি এটাই উত্তর দেব যে, আমি শিল্পী। আমি মানুষের জন্য গান গাই।’