2 মিনিটে পড়ুন Updated: 03 May 2025, 10:05 AM ISTSanjib Halder
প্রাক্তন ভারতীয় কোচ গ্রেগ চ্যাপেল বিসিসিআইকে বড়সড় সতর্কবার্তা দিয়েছেন। বৈভবের দেখভালের বিষয়ে BCCI-কে বিশেষ পরামর্শ দিয়েছেন গ্রেগ চ্যাপেল। ভারতের ইতিহাসে সচিন তেন্ডুলকরের মতো বিস্ময় প্রতিভার উত্থান যেমন ঘটেছে, তেমনি বিনোদ কাম্বলি ও পৃথ্বী শ-র মতো প্রতিভাবানদের পতনের ঘটনাও দেকা গিয়েছে।
বৈভব সূর্যবংশী আবারও প্রমাণ করে দিয়েছেন যে বয়স শুধুমাত্র একটি সংখ্যা, এবং যদি আপনার মধ্যে বিশেষ প্রতিভা থাকে, তাহলে আপনাকে কেউ থামাতে পারবে না। প্রতিটি প্রজন্মে আমরা ঘরোয়া ক্রিকেট থেকে উঠে আসা একজন উদীয়মান তারকাকে দেখি, কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) হয়ে উঠেছে সেই মঞ্চ, যেখানে প্রতিভাবান ক্রিকেটাররা বিশাল দর্শকগোষ্ঠীর সামনে নিজেদের প্রমাণ করার সুযোগ পান।
মাত্র ১৪ বছর বয়সে নিজের প্রথম আইপিএল মরশুমেই বৈভব ব্যাট হাতে রানের ঝড় তুলেছেন। ৩৫ বলে সেঞ্চুরি করে সকলের মন জিতেছেন। যা ক্রিকেট বিশ্বকে হতবাক করে দিয়েছে। আইপিএলের ইতিহাসে এটি দ্বিতীয় দ্রুততম শতরান।
তবে এর মাঝেই বৈভবকে নিয়ে প্রাক্তন ভারতীয় কোচ গ্রেগ চ্যাপেল বিসিসিআইকে বড়সড় সতর্কবার্তা দিয়েছেন। বৈভবের দেখভালের বিষয়ে BCCI-কে বিশেষ পরামর্শ দিয়েছেন গ্রেগ চ্যাপেল। ভারতের ইতিহাসে সচিন তেন্ডুলকরের মতো বিস্ময় প্রতিভার উত্থান যেমন ঘটেছে, তেমনি বিনোদ কাম্বলি ও পৃথ্বী শ-র মতো প্রতিভাবানদের পতনের ঘটনাও দেকা গিয়েছে।
গ্রেগ চ্যাপেল তাঁর ESPNcricinfo–র কলামে লেখেন, ‘সচিন তেন্ডুলকর কেবল প্রতিভার জোরেই সফল হননি, বরং তাঁর দৃঢ় মানসিকতা, বিচক্ষণ কোচ এবং পরিবারের সঠিক সহায়তা তাঁকে বাঁচিয়ে রেখেছিল। অন্যদিকে, বিনোদ কাম্বলি, যিনি সমানভাবে প্রতিভাবান এবং হয়তো আরও বেশি ঝলমলে ছিলেন, তিনি খ্যাতি ও শৃঙ্খলার ভারসাম্য বজায় রাখতে পারেননি। তাঁর পতনটা হয়েছিল ঠিক যেমনভাবে তাঁর উত্থান হয়েছিল। পৃথ্বী শ-ও এমন এক বিস্ময় প্রতিভা, যার পতন হয়েছে, তবে এখনও হয়তো সে ফিরতে পারে।’
কাম্বলি ও সচিনের পথচলা শুরু হয়েছিল একসঙ্গে। সচিন যেখানে কিংবদন্তিতে পরিণত হন, কাম্বলি রয়ে যান এক বিস্মৃত তারকা। সচিন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মোট ৩৪,৩৫৭ রান করে ইতিহাসে নাম লিখিয়েছেন। ১৫,৯২১ টেস্টে, ১৮,৪২৬ ওডিআইতে এবং একমাত্র টি২০ ম্যাচে করেছেন ১০ রান।
অন্যদিকে, বিনোদ কাম্বলি খেলেছেন মাত্র ১৭টি টেস্ট ও ১০৪টি ওডিআই। যদিও টেস্টে টানা দুটি ডাবল সেঞ্চুরি করে (২২৪ বনাম ইংল্যান্ড, মুম্বই এবং ২২৪ বনাম জিম্বাবোয়ে, দিল্লি) নজর কেড়েছিলেন, তাঁর অনিয়মিত পারফরম্যান্স এবং মাঠের বাইরের অস্থির জীবন তাঁর কেরিয়ার শেষ করে দেয়। পরে মদ্যপানে আসক্ত হয়ে পড়েন এবং গত এক দশকে স্বাস্থ্য সমস্যা জর্জরিত হয়ে পড়েন। গত ডিসেম্বরে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়, যদিও পরে তিনি ছেড়ে দেওয়া হয়।
পৃথ্বী শ-ও এমনই পতনের গল্প। খুব অল্প বয়সে ‘চাইল্ড প্রডিজি’ হিসেবে পরিচিত হন এবং ২০১৮ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ী দলের অধিনায়ক ছিলেন। কিন্তু আজ তিনি সিনিয়র জাতীয় দলে কোনও পরিকল্পনায় নেই। শুভমন গিল ও আর্শদীপ সিং, যাঁরা পৃথ্বীর অধীনে খেলেছিলেন, ইতিমধ্যেই বিশ্বমঞ্চে তারকা হয়ে উঠেছেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পৃথ্বী অভিষেকেই শতরান করেছিলেন, কিন্তু শৃঙ্খলাহীনতা, ফিটনেসের অভাব এবং মাঠের বাইরের বিতর্ক তাঁর কেরিয়ারে বিপর্যয় ডেকে আনে। এমনকি এই বছরের আইপিএল মেগা নিলামেও তিনি অবিক্রিত থেকে যান, যেখানে ১৪ বছরের বৈভব আসর দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন।
এই অভিজ্ঞ অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার তরুণ প্রতিভাদের সঠিকভাবে গড়ে তোলার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে বলেন, ‘এই গল্পগুলো কিশোরদের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে না, বরং সেই প্রতিভাকে কীভাবে গড়ে তোলা হয় বা কখনও কখনও শোষণ করা হয়, সেই বোধকে চ্যালেঞ্জ করে।’ তিনি বিসিসিআই, আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজি ও মিডিয়াকে অনুরোধ করেন বৈভবকে রক্ষা করতে এবং তাঁকে শুধুই প্রচারের হাতিয়ার না বানিয়ে সঠিকভাবে গড়ে তোলার জন্য মনোযোগ দিতে।