বয়ে চলেছে জলঢাকা নদী। আর তার স্রোতের কলকল শব্দে প্রকৃতির এক অদ্ভূত সৌন্দর্য তৈরি হয়েছে। এবার আর একটা সৌন্দর্য ধরা পড়ল মালবাজার মহকুমার নাগরাকাটার উপকণ্ঠে। এখানেই প্রবহমান জলঢাকা নদী। আর তার তীরে দেখা মিলল এক ঝাঁক শকুনের। তবে যে সে শকুন নয়, একেবারে ‘হিমালয়ান গ্রিফন ভালচার’। যা বহুদিন পর মালবাজার এলাকায় দেখা দিয়েছে। আর এইসব শকুনের দেখা মেলায় উচ্ছ্বসিত পরিবেশপ্রেমীরা। একদা দেখা যেত। তারপর তা হারিয়ে গিয়েছিল। আজ, বুধবার নাগরাকাটা লাগোয়া ১৭ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে যে রাস্তা খাসবস্তির দিকে যাচ্ছে সেখানেই জলঢাকা নদীর ধারে একঝাঁক ‘হিমালয়ান গ্রিফন ভালচারের’ দেখা মিলল।
এই ‘হিমালয়ান গ্রিফন ভালচার’ এখানে দেখা যাবে বা আসবে তা কখনও কল্পনাও করেননি অনেকে। কারণ একদা এমন শকুন আসত সেটা শোনা কথা। নিজের চোখে দেখেছেন এমন মানুষের খোঁজ অত্যন্ত কম। সেখানে আজ ‘হিমালয়ান গ্রিফন ভালচারের’ দেখা পেয়ে সকলে ছবি তুললেই ব্যস্ত। এই বিশেষ প্রজাতির শকুনগুলি একটি মৃত গরুর দেহবশেষ ভক্ষণ করতে এসেছিল। সেই সুযোগে স্থানীয় বাসিন্দা থেকে পর্যটকরা ‘হিমালয়ান গ্রিফন ভালচারের’ ছবি তুলে নিয়েছেন। অনেকদিন পরে একসঙ্গে এতগুলি ‘হিমালয়ান গ্রিফন ভালচারকে’ দেখতে পেয়ে রীতিমতো কৌতূহল ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়।
আরও পড়ুন: ‘ওবিসি সমস্যা মিটে গেলে ২–৩ লক্ষ নিয়োগ হবে’, সুপ্রিম কোর্টের প্রশংসা করে মন্তব্য মমতার
‘হিমালয়ান গ্রিফন ভালচারকে’ দেখতে অনেকে ভিড় জমান জলঢাকা নদীর তীরে। এই ‘হিমালয়ান গ্রিফন ভালচার’ দেখে পরিবেশপ্রেমীরা বলছেন, ‘একাধিক কারণে শকুনের সংখ্যা ক্রমশ কমছে। সেখানে বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য রক্ষায় এই ‘হিমালয়ান গ্রিফন ভালচারের’ গুরুত্ব অপরিসীম।’ খাসবস্তি লাগোয়া সুলকাপাড়ার পরিবেশপ্রেমী ফরিদুল হক বলেন, ‘এক সময় জলঢাকা নদী তীরবর্তী এলাকা ‘হিমালয়ান গ্রিফন ভালচারের’ বিচরণ ক্ষেত্র হিসাবে পরিচিত ছিল। কিন্তু মাঝের অনেকটা সময় তা আর দেখা যায়নি। বহুদিন পরে আবার এখানে ‘হিমালয়ান গ্রিফন ভালচার’দের দেখা মিলল। এটা অত্যন্ত খুশির খবর।’
একদিন আগেই বক্সা টাইগার রিজার্ভ ফরেস্টে দেখা মিলেছিল হিমালয়ান গ্রে ল্যাঙ্গুরকে। সেই ছবি ধরা পড়েছিল এক পর্যটকের ক্যামেরায়। এবার মালবাজারে ধরা পড়ল ‘হিমালয়ান গ্রিফন ভালচার’। উত্তরবঙ্গের বিশিষ্ট পরিবেশবিদ তথা পরিবেশপ্রেমী সংগঠন হিমালয়ের নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার ফাউন্ডেশনের মুখপাত্র অনিমেষ বসুর বক্তব্য, ‘জলঢাকার তীরে যেসব শকুনগুলিকে দেখা গিয়েছে সেগুলি হিমালয়ান গ্রিফন প্রজাতির। আকারে বেশ বড় হয়। এই ধরনের শকুনও বিরল তালিকাভুক্ত। শীতকালে হিমালয় এলাকা থেকে নেমে আসে এরা। গরম পড়তেই তাদের আবার হিমালয়ে ফিরে যাওয়ার সময় হয়।’