ক্লাসের মধ্যেই ছাত্রের সঙ্গে ‘বিয়ে’ করার অভিযোগ উড়িয়ে দিলেন অধ্যাপিকা। ‘বিয়ের’ ভিডিয়ো ভাইরাল হওয়ার পরে আবুল কালাম আজাদ ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজির (ম্যাকাউট) হরিণঘাটা ক্যাম্পাসের অধ্যাপিকা দাবি করেছেন যে ফ্রেশার পার্টির জন্য একটি নাটকের পরিকল্পনা করেছিলেন পড়ুয়ারা। সেই নাটকের অংশ হিসেবেই ওই ‘বিয়ের’ দৃশ্য ক্যামেরাবন্দী করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁকে বিপদে ফেলতে এখন সেই ভিডিয়ো ইচ্ছাকৃতভাবে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন অধ্যাপিকা। তাঁর দাবি, ভিডিয়ো ছড়ানোর নেপথ্যে এক ‘বন্ধু’ আছেন। তাঁকে হটিয়ে নিজে অ্যাপ্লায়েড সাইকোলজি বা ফলিত মনোবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান হওয়ার জন্য এবং পড়ুয়াদের ব্ল্যাকমেলের কথা চেপে রাখার জন্য সেই ‘বন্ধু’ তাঁর ভিডিয়ো ছড়িয়ে দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন অধ্যাপিকা।
বন্ধুত্ব ছাড়াও মনুষ্যত্বের নোংরা উদাহরণ, দাবি অধ্যাপিকার
তিনি বলেছেন, ‘মানুষ কী পর্যায়ে নামতে পারে, সেটা কল্পনারও বাইরে। নিজে প্রধান হওয়ার জন্য এবং ছাত্র-ছাত্রীদের ব্ল্যাকমেলের কথা ঢাকা দেওয়ার জন্য স্রেফ একটা বিভাগের নাটকের দৃশ্যকে (ড্রামা ক্লিপস) ব্যবহার করতে পারে…জানা ছিল না। বন্ধুত্ব ছাড়াও মনুষ্যত্বের নোংরা উদাহরণ।’
বিভাগীয় প্রধান হওয়ার লোভে এতটা নীচে নামা যায়! হতবাক অধ্যাপিকা
সেইসঙ্গে অধ্যাপিকা দাবি করেছেন, যাঁকে হাতে ধরে কাজ শিখিয়েছেন, তিনি যে স্রেফ বিভাগীয় প্রধান হওয়ার লোভে এতটা নীচে নেমে যাবেন, সেটা স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি। যিনি পিছন থেকে তাঁকে ছুরি মেরেছেন, তিনিও বেশি লাভবান হতে পারবেন না বলে দাবি করেছেন অধ্যাপিকা। তাঁর কথায়, ‘অন্যের ক্ষতি করে কোনওদিন এগিয়ে যাওয়া যায় না।’
ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই হইচই শুরু হয়
আর যে ভিডিয়ো নিয়ে এত হইচই শুরু হয়েছে, তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে যে অধ্যাপিকা লাল বেনারসি পরে দাঁড়িয়ে আছেন। গলায় আছে মালা। তাঁকে 'সিঁদুর' পরিয়ে দিচ্ছেন কলেজের এক প্রথম বর্ষের ‘ছাত্র’। তাঁর গলাতেও মালা ছিল। আর সেই মুহূর্তের ভিডিয়ো করছেন কয়েকজন। আশপাশ থেকে হাসির শব্দ শোনা যায়। তারইমধ্যে পাশ থেকে বলতে শোনা যায়, ‘নাকে পড়েনি।’ সেটা শুনে 'সিঁদুর' নিয়ে অধ্যাপিকার নাকে লাগিয়ে দেন ওই ‘ছাত্র’।
সেই ভিডিয়োটি সামনে আসার পরই ওই অধ্যাপিকাকে ছুটিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য তাপস চক্রবর্তীর দাবি, অধ্যাপিকার বিরুদ্ধে তদন্ত করা হচ্ছে। যদিও ওই ‘ছাত্র’-র হদিশ মেলেনি। তারইমধ্যে অধ্যাপিকা দাবি করেছেন যে কলেজের ফ্রেশার পার্টিতে একটি নাটক করার পরিকল্পনা করেছিলেন পড়ুয়ারা। তাতে অধ্যাপক-অধ্যাপিকাদেরও যোগ দিতে আহ্বান করা হয়েছিল। আর সেই বিয়ের দৃশ্যটা ওই নাটকেরই অংশ ছিল বলে দাবি করেছেন অধ্যাপিকা।